শবে কদরের নামাজের নিয়ম ,শবে কদরের রাত্রি মানে লাইলাতুল কদরের রাত্রি। এক সাহাবী হযরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর ইরশাদ করেছেন, একবার রমজানের মাস চলে আসলো তখন রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন, "এটি সেই মাস এসেছে যার মধ্যে একটি এমন রাত্রি আছে যেই রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।" তারপর হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই রাতের ফজিলত বর্ণনা করতে শুরু করলেন, আর বললেন "যে ব্যক্তি এই শবে কদরের রাত্রে বিরত থাকলো মানে এই রাত্রিতে আল্লাহর ইবাদত করল না বরং গাফিলতির সাথে অলস ভাবে এ রাত্রিকে কাটিয়ে দিল তাহলে সেই ব্যক্তির সমস্ত রকম ভালো জিনিস থেকে বিরত থেকে গেল।" মানে সেই ব্যক্তি কোন খায়ের এবং বরকত মিললো না। এরপরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম আবার বললেন "এই শবে কদরের রাত্রিতে সেই মানুষেরাই বিরত থাকে যারা বাস্তবেও বিরত থাকে" মানে তারা এই রাত্রি কে পাওয়ার চেষ্টাই করে না। আর তারা এই পবিত্র মূল্যবান রাত থেকে বিরত থেকে যায়।
এই রাত্রি রমজানের শেষ দশ রোজার বেজোড় রাত্রের মধ্যে এসে থাকে। মানে ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ শে রাতের মধ্যে থেকে। এই পাঁচ রাতের মধ্যে যেকোনো একটি রাতই শবে কদরের রাত হয়ে থাকে। তো আমাদেরকে এই পাঁচটি রাতের মধ্য থেকেই লাইলাতুল কদর মানে ভাগ্য নির্ধারণের রাত্রিকে খুঁজে নেওয়া দরকার।
আপনাদের কে জানিয়ে রাখি যে এই পাঁচ রাত্রিতে ইবাদত করার পদ্ধতি একি রকম। কোন রাত্রের আলাদা আলাদা পদ্ধতি নেই। আপনি এই পাঁচ রাত্রিতেই ঠিক এমন ভাবে এবাদত করুন যেমন ভাবে এই আর্টিকেলটিতে আপনাদেরকে জানানো হবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে মহিলা এবং পুরুষ সবার জন্য একইরকম পদ্ধতি হয়ে থাকে। আপনি শুধুমাত্র এই আর্টিকেলটিকে মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা আমরা আশা রাখছি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনার মনে যতগুলো সমস্যা আছে সবকিছু সমাপ্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এই আর্টিকেলটিতে আপনি শবে কদরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেটি জানার সাথে সাথে এটিও জানবেন যে এই রাত্রিতে কোন এবাদত গুলো বেশি বেশি করতে হয়। তো জুড়ে থাকুন আমাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত।
আরো পড়ুন⇨ শবে কদর কি? কী ঘটেছিল এই কদরের রাতে? শবে কদরের ফজিলত ও আমল
শবে কদরের নামাজের নিয়ম এবং পদ্ধতি
শবে কদরের রাত একটি এমন রাত যা রমজান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে পাওয়া যায় না। আর এই রাত মুসলিম উম্মার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই রাতে মুসলিম উম্মাহর জন্য বরকত নাজিল করে থাকেন। আর সেজন্য আমরা এই রাত্রে বেশি বেশি করে ইবাদত করব। যতটা সম্ভব ততটা আল্লাহর ইবাদত করে কাটানোর চেষ্টা করব। এই রাত্রিতে আমার সর্বপ্রথম এশার নামাজ পড়ে নেবো। তারপর আমরা তারাবির নামাজকেও শেষ করে নেব। কিন্তু আমরা বেতের নামাজ কে বাকি রেখে দেবো। কেননা বেতের নামাজ যত গভীর রাত্রি তে পড়া যায় তত ভালো। সেজন্য আপনার সমস্ত এবাদত হয়ে যাওয়ার পর এই নামাজটি পড়ে নেবেন। তো এবার যখন আপনার এশা এবং তারাবির নামাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে তখন আপনি কিছুটা সময় আরাম করে নেওয়ার পরেই এই নামাজটি শুরু করবেন। এটি একটি নফল নামাজ সেজন্য আপনি দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়বেন। এই দুই রাকাত নামাজ পড়ার পদ্ধতি ঠিক তেমনি যেমন সাধারন নামাজ পড়ার পদ্ধতি হয়ে থাকে। তাহলে চলুন আমরা জেনে নিই নামাজ কিভাবে পড়তে হয়।
এই দুই রাকাত নামাজ পড়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনি নিয়ত করে নিন। যেহেতু অন্তরে নিয়ত ফরজ, আপনার অন্তর যেটা বলছে সেটাই নিয়ত। হোক আপনি সেটা মনে মনে বলবেন অথবা উচ্চারণ করে বলবেন। নিয়ত করার সঠিক পদ্ধতি হলো যেটি আপনি মনস্থির করে নিয়েছেন সেটিই নিয়ত। তো সবচেয়ে ভালো হবে আপনি কত রাকাত নামাজ পড়বেন সেটির একেবারে নিয়ত করে নেবেন। তারপর শুধু কানে হাত দিয়ে 'আল্লাহু আকবার' বলে দাঁড়িয়ে যাবেন। তো আপনাদেরকে বাংলা নিয়তটিও জানিয়ে দিচ্ছি, "আমি কাবা শরীফের দিকে মুখ করিয়া আল্লাহর ওয়াস্তে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ছি, আল্লাহু আকবর'' এটি হয়ে গেলো নিয়তের পদ্ধতি। তারপরে আমরা যখন নিয়ত কে বেঁধে নেবো মানে আমরা যখন দুই হাত দিয়ে বুকে বেধে নেব তখন আমরা সর্বপ্রথমে দোয়া 'সানা' কে পড়বো মানে "সুবহা নাকা আল্লা-হুম্মা" কে পড়বো, আর এটিকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নেব। তারপর আমরা 'তাউস' করবো মানে "আউজুবিল্লা-হি মিনাশশাইতনির রজিম" কে পড়বো। তারপর আমরা 'তাসনিয়া' মানে "বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম" পড়বো। আর এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে 'সূরা ফাতিহা' মানে "আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন" কে শেষ পর্যন্ত পড়বো এবং শেষে আমিন বলবো।
তারপর আমরা আবার 'তাসনিয়া' কে পড়বো মানে 'বিসমিল্লাহ' পড়ার পর কোন অন্য একটি সূরা যেকোনো সূরা আপনার যেটা মনে থাকবে সেটি কে যুক্ত করে নেবেন। যদি আপনার ছোট ছোট দশটি সূরা মনে থাকে তাহলে তার মধ্যে যেকোনো একটি সূরাকে যুক্ত করে নিতে পারেন। যদি আমরা দশটি ছোট ছোট সূরার কথা বলে থাকি তাহলে আমরা প্রথম রাকাতে "আলাম তারা" সূরাটিকে পড়ে নেব। তারপর আলাম তারা সূরা টি কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর "আল্লাহু আকবার" বলে রুকুতে চলে যাব। তারপর রুকুতে গিয়ে "সুবহানা রব্বিয়াল আযীম" কে পড়বো। আর এটিকে তিনবার পাঁচবার অথবা সাত বার পড়বো। তারপর আপনি "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা-রব্বানা লাকাল হামদু" বলে সোজা খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন। এরপর আপনি "আল্লাহু আকবার" বলে সিজদাহতে চলে আসুন। সিজদাহ তে গিয়ে তিন বার পাঁচ বার অথবা সাত বার "সুবহানা রাব্বিয়াল আলা" কে পড়ুন। আর তারপর আল্লাহু আকবার বলে সিজদাহ থেকে উঠে বসে যান। তারপর আবার আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদাহতে চলে যান। আর দ্বিতীয় সিজদাহতেও "সুবাহানা রাব্বিয়াল আলা" কে তিন বার পাঁচ অথবা সাত বার করে পড়ে নিন।
এবার আমাদের প্রথম রাকাতের দুটো সিজদাই সম্পূর্ণ হয়ে গেল। সেই জন্য আমরা "আল্লাহু আকবার" বলে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে যাব। এবার দ্বিতীয় রাকাতে যেমন আমরা প্রথম রাকাতে দোয়া সানা থেকে শুরু করে তাউস পড়েছিলাম কিন্তু এই রাখাতে আমরা তাসনিয়া থেকে শুরু করবো। মানে দ্বিতীয় রাকাতে সানা এবং আউযুবিল্লাহ পড়ার দরকার নেই। আর এই রাকাতেই "বিসমিল্লাহ" থেকে শুরু করব এবং "আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন" কে শেষ পর্যন্ত পড়ে শেষ বেলায় আমিন বলব। তারপর আবার আমরা 'বিসমিল্লাহ' কে পড়বো এবং 'বিসমিল্লাহ' পড়ার পরে যে সূরা আপনার মনে থাকবে আপনি সেটিকে লাগিয়ে নেবেন। সবসময় মনে রাখতে হবে যে প্রথম রাকাতে যেই সুরা কে আপনি লাগিয়েছেন তার পরের রাকাতে আপনাকে সেই সূরার পরের সূরাকে পড়তে হবে। আপনি দ্বিতীয় রাকাতে আগের সূরাকে পড়তে পারবেন না।
মানে যেমন ধরুন আপনি প্রথম রাকাতে 'আলাম তারা' কে পড়েছেন তাহলে তারপরে 'লিল ইলাফি কুরাইশ' কিংবা 'ইন্না আতাইনা' অথবা 'কুলহু আল্লাহু আহাদ' পড়লে এটি ঠিক আছে। কিন্তু আপনি প্রথমে 'কুলহু আল্লাহু আহাদ' পড়ে দ্বিতীয় রাকাতে এর আগের সূরা 'ইন্না আতাইনা' কিংবা 'আলাম তারা' কে পড়তে পারবেন না।
তো প্রথম রাকাতে যেমন আমরা 'আলাম তারা' কে লাগিয়েছিলাম তাহলে আমরা দ্বিতীয় রাকাতে 'সূরা কুরাইশ' 'লিই ইলাফি কুরাইশ' কিংবা 'ইন্না আতাইনা' অথবা 'কুলহু আল্লাহ আহাদ' কে পড়ে নেব। সবচেয়ে ভালো হবে আপনি প্রথম রাকাতে যে কোন সূরাকে পড়ে নিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে 'সূরা ইখলাস' মানে 'কুলহু আল্লাহু আহাদ' কে পড়বেন। আর এটি বারবারেই পড়তে পারেন। এবার আমাদের সূরা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আমরা 'আল্লাহু আকবার' বলে রুকুতে চলে যাব। আর তারপর রুকুতে গিয়ে আবারও 'সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম' তিনবার পাঁচবার অথবা সাতবার পড়বো। তারপর এটি হয়ে গেলে 'সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা-রব্বানা লাকাল হামদ' বলে সোজা হয়ে খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে যাবো। তারপর আবার আমরা 'আল্লাহু আকবার' বলে প্রথম সিজদাহ তে থেকে চলে যাব। আর সিজদাহ তে গিয়ে 'সুবহানা রব্বিয়াল আলা' তিন বার, পাঁচ বার অথবা সাতবার পড়বো। তারপর 'আল্লাহু আকবার' বলে বসে যাব। আর তারপর আবারো 'আল্লাহু আকবার' বলে দ্বিতীয় সিজদাহ তে চলে যাব। আর সেখানেও 'সুবাহানা রাব্বিয়াল আলা' কে তিনবার পাঁচবার অথবা় সাতবার পড়ে নেব। এটিকে পড়ার পর আমরা আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদাহ থেকে উঠে বসে যাব।
এবার আমাদের দুই রাকাত নামাজের সিজদাহ সম্পূর্ণ হয়ে গেলো।
এরপর আমরা বসে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম 'তাশাহুদ' 'আত্তাহিয়াতু' কে পড়বো। আর আত্তাহিয়াতু পড়ার পর 'দরুদ শরীফ' কে পড়বো মানে 'আল্লাহুম্মা সল্লেয়ালা' কে পড়বো। এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সর্বশেষে আমরা 'দোয়া মাসুরা' কে পড়বো। মানে 'আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান' কে পড়বো। আর যখন দোয়া মাসুরা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে তখন আমরা সোজাসুজি 'আসসালামুয়ালাইকুম' বলে ডান দিকে সালাম ফিরাবো আর তারপর আবার সামনে দিকে সোজাসুজি মুখ করে বাম দিকে আবার 'আসসালামু আলাইকুম' বলে সালাম শেষ করে নেবো।
তো এটাই ছিল দুই রাকাত নামাজের পদ্ধতি। যেহেতু শবে কদরের নফল নামাজ আর সেজন্য আপনি দুই রাকাত করে যত রাকাত পড়ার ইচ্ছা তত রাকাত পড়তে পারেন।
কোরআন কতটুকু পরবো
এবার এটা তো হয়ে গেল আমাদের দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ার পদ্ধতি। এরপর আমরা কি করব? আমাদের নামাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর আমরা 'কুরআনে পাক' কে পড়বো। আপনি কোরান শরীফকে যতটা ইচ্ছে ততটা পড়তে পারেন। মানে যতটা আপনার সামর্থের মধ্যে হবে।
আপনাদেরকে একটি কথা জানিয়ে রাখি যে এই পবিত্র রাতেই কোরআনে কারিম নাযিল হয়েছিল। সেজন্য আমরা এই শবে কদরের রাত্রিতে যত বেশি পারবো তত বেশি করে কোরআন পড়ার চেষ্টা করব।
কোরআন পড়তে না পারলে কি করবেন
এবার যারা কোরআনে পাক কে পড়তে জানেন না তারা কি করবেন? তাহলে তাদের জন্য একটি পদ্ধতি এমন আছে যে তারা 'বিসমিল্লাহ' বলে 'কুরআনে পাক' কে পড়বেন। সেটা কিভাবে পড়বেন সেটিও আপনাদের কে জানিয়ে দিচ্ছি।
প্রথমে আপনি কু'রআনে পাক' কে খুলে নিন। অজু তো আপনি নিশ্চয়ই করে রেখেছেন। আর যদি অজু না থাকে তাহলে অবশ্যই করে নেবেন। তারপর 'কোরআনে শরীফ' কে খোলার পর প্রত্যেক আয়াতে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' বলে হাত বোলাতে থাকেন। আর এমনিভাবে আপনি শবে কদরের রাত্রি তে 'বিসমিল্লাহ' দিয়ে 'কোরআনে করিম' কে পড়তে পারেন। কেননা 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' কোরআনে কারিমেরই একটি আয়াত। আর এইজন্যই এই আয়াতের সোয়াব অপরিসীম। যদি আপনি একবার 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' কে পড়েন তাহলে আপনার সেই বরকতে ১০ থেকে নিয়ে ৭০০ গুণ পরিমাণে সোয়াব মিলবে। আর এমনভাবে আপনি 'বিসমিল্লাহ' দিয়ে 'কুরআন' কে পড়তে পারেন।
কিন্তু যেহেতু আমরা মুসলমান, মুসলমান হওয়ার জন্য কুরানকে পড়া আমাদের জন্য খুবই গর্বের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু যদি আপনি 'কুরআনে পাক' কে এখনো পর্যন্ত না পড়তে পারেন তাহলে আপনি আজই নিয়ত করে নিন। ইনশাআল্লাহ এরপর আপনি অবশ্যই চেষ্টা করবেন আর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন।
দরূদ শরীফ পাঠের ফজিলত
এমনি করে কিছু সময় পর্যন্ত কুরআনে কারীম কে পড়ার পর এরপর আপনি দরূদ শরীফের তাজবি পড়া শুরু করবেন। কেননা দরূদ শরীফের অনেক বেশি পরিমাণে ফজিলত ও হাদিসের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ রব্বুল আলামীন এমন ব্যক্তিদের উপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করে থাকেন যেই ব্যক্তি আল্লাহর নবীর উপর একবার দরূদ শরীফ পড়ে থাকেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একবার দরূদ শরীফ পড়ার জন্য সেই ব্যক্তির উপর থেকে ১০০ টি মুসিবত দূর করে দেন। ৩০ টি মুসিবত এই দুনিয়ার আর ৭০ টি মুসিবত আখিরাতের। এইজন্য দরুদ শরীফ কেও এই রাত্রিতে খুবই বেশি বেশি করে পড়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া
এছাড়াও আমাদেরকে এই রাত্রিতে ইস্তেগফার তসবি কে বেশি বেশি করে পড়া দরকার। ছোট করে বললে 'আস্তাগফিরুল্লাহ' আর যদি একটু বেশি বড় করে বলি তাহলে 'আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিউ ওয়াতুবু ইলাইহি। কেননা এখান থেকেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের অবশ্যই মাফ করে দিবেন।
তাহাজ্জুত নামাজ আদায়
এগুলো সব সম্পুর্ন হয়ে যাওয়ার পর আপনি একটা কাজ করুন, তাহাজ্জুত নামাজ পড়ুন। আর তাহাজ্জুতের নামাজের পর আপনি এবার নতুন করে আল্লাহর দরবারে হাত উঠান। কেননা এ সময় আল্লাহ রব্বুল আলামীন বান্দার সকল দোয়াকে কবুল করে থাকেন। যদি সেই রাত শবে কদরের রাত হয়ে থাকে আর আপনি যদি এই সমস্ত ইবাদত করে তাহাজ্জুতের নামাজ কে সম্পন্ন করার পর আল্লাহর দরবারে হাত উঠিয়ে থাকেন , তাহলে আপনি একবার নিজেই ভেবে দেখুন মহান রব্বুল আলামীন আপনার উপর কত খুশি হবেন!
দান সদ্গা করা
এর পাশাপাশি আপনি এই শবে কদরের রাত্রিতে কিছু পয়সার সদকাও করে দিতে পারেন। মানে এই রাত্রিতে নিয়ত করুন যে আপনি কিছু পয়সা কে দান করবেন। আর সেই পয়সাকে সে রাত্রিতে আলাদা করে রেখে দিয়ে এর পরদিন সকালে গরিবদের মাঝে সদ্গা করে দিবেন। মানে এই রাত্রিতে আপনার উদ্দেশ্য হবে খুব বেশি বেশি করে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকা। সেখানে হোক নামাজ, ইস্তেগফার, কুরআন তিলাওয়াত অথবা সদ্গা যেকোন অবস্থাতে। কেননা আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেছেন, "এই রাতের ইবাদত ৮৪ বছরের ইবাদতের সমান"। একবার ভেবে দেখুন ৩/৪ ঘন্টা ইবাদত করার পর যদি আপনি এতো বছরের সোয়াব পেয়ে যান তাহলে কতই না উত্তম হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে আপনি এই রাত্রিতে কাজা নামাজকেও উঠাতে পারেন। আর ক্বাজা নামাজের নিয়ত হবে " আমি ক্বাবা শরীফের দিকে মুখ করে এতো রাকাত অমুক সময়ের ক্বাজা নামাজ পড়ছি ,আল্লাহু আকবার।
আর সর্বশেষে যেই বেতের নামাজ বাকি ছিলো সেটি পড়ে নেবেন।
আরেকটা জরুরি কথা , দেখবেন যেই রাত্রিতে বেজোড় রাত্রি আছে সেদিনের সকালের দিকে কিংবা দুপুরের দিকে কিছুটা ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। মানে যাতে করে আপনার রাত জাগতে সুবিধা হয়।
তো আজ এ পর্যন্ত।
আর্টিকেলটি ভালো লাগবে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।