৮ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তুরষ্কের ভূমিকম্প হওয়ার ঘটনায় মোটামুটি সবাই অবগত হয়েছেন। ৮ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে সেই দেশের প্রায় অর্ধলক্ষ্য মানুষ মারা যায়। এই অর্ধলক্ষ্য মাত্র ৪০ সেকেন্ডের ভূমিকম্পে বড় বড় বিল্ডিং-ইমারতের নিচে চাপা পড়ে এক মুহুর্তে নিঃশেষ হয়ে যায়। সেই সাথে তুরষ্কের সম্পদ এবং অর্থনীতিতে বিরাট ক্ষতিসাধন হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশকে নিয়ে এমনই এক ভয়ংকর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি তার গবেষণায় উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ ৮.৩ থেকে ৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে অবস্থান করছে। আর সেইসাথে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে জোর দাবি জানিয়েছেন।
ভূমিকম্প কেন হয়-
ভূগর্ভে শিলাস্তরে যখন কোনো শিলা অন্য কোনো শিলার উপরে উঠে আসে অথবা পরস্পর ঘর্ষনের ফলে এক প্রকার শক্তি সঞ্চিত হয়। এই শক্তি আচমকা মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠে কিছু সময়ের জন্য কম্পনের সৃষ্টি হয়। এই আচমকা এবং আকষ্মিক কম্পনের ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। আবার ভূ-গর্ভে অবস্থিত সুপ্ত লাভা যখন আন্দোলিত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল বা আগ্নেয়গিরির মুখ থেলে বেড়িয়ে আসে তখনই ভূ-পৃষ্ঠে প্রবল কম্পনের অনুভূত হয় যা ভূমিকম্প নামে পরিচিত।
ভূমিকম্পের স্থায়িত্বকাল-
ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তা হলো রিখটার স্কেল। রিখটার স্কেলের মাত্রাসীমা ১ থেকে ১০ একক পর্যন্ত। ভুমিকম্প সাধারণত কিছু সময় বা কয়েক সেকেন্ডের হয়ে থাকে। কিন্তু এই কয়েক সেকেন্ডের ভুমিকম্পই ঘটাতে পারে ব্যাপক ধ্বংস ও প্রাণহানি। রিখটার স্কেলের মাত্রা ৫ এর বেশি হলেই দূর্যোগের আশংকা করা হয়। রিখটার স্কেলের ভুমিকম্পের মাত্রা ৫ - ৫.৯৯ মাঝারি, ৬ - ৬.৯৯ তীব্র, ৭ - ৭.৯৯ ভয়াবহ এবং ৮ - এর উপর অত্যন্ত ভয়াবহ। আর যেখানে বাংলাদেশই অবস্থান করছে ৮.৬ মাত্রার জোন এ। তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন কিরূপ ভয়াবহ বিপদের মধ্যে আছে বাংলাদেশের মানুষ।
ভুমিকম্পের সময় করণীয় -
• ভূমিকম্প অনুভূত হলে সাথে সাথে কোনো ফাকা স্থানে অবস্থান করুন।
• বিল্ডিংয়ের ভিতর কিংবা উঁচু ভবনে অবস্থানকালে শক্ত খাট, টেবিলের নিচে অবস্থান নিন।
• উচু ভবনের নিচে কোনভাবেই অবস্থান করা হতে বিরত থাকুন
• প্রয়োজনে পুলিশ অথবা ফায়ার সার্ভিসের নম্বর সংগ্রহ করে রাখুন যা বিপদে আপনার কাজে লাগবে।
• দ্রুত নামার জন্য লাফিয়ে পড়বেন না।
• গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ হতে দূরে অবস্থান করুন।
• ভবনে অবস্থানকালে মাথার উপর শক্ত বালিশ অথবা শক্ত বস্তু ধরে রাখুন।
• গাড়িতে অবস্থান-কালে গাড়ি ফাকা জায়গায় থামিয়ে গাড়িতেই অবস্থান করুন।
• একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যাকে ‘আফটার শক’ বলে। নিজেকে বিপদমুক্ত ভাবতে অন্তত একঘণ্টা সময় নিন।
• ধৌর্যহারা হবেন না।
• কোনভাবে প্যানিকড না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন।
বিস্তারিত জানতে ভিডিও টি দেখুন